নারায়ণগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে যুবদল নেতা শাওন হত্যার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) শাওনের বড় ভাই মো: মিলন মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় নারায়ণগঞ্জের সাবেক ৫ এমপি শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী, লিয়াকত হোসেন খোকা, সাবেক এসপি গোলাম মোস্তফা রাসেল, সাবেক ডিসি মঞ্জুরুল হাফিজসহ ৫২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আরও ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিহত শাওন সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়নের গোপালনগর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাহেব আলীর ছেলে।
বাদী মিলন মিয়া বলেন, আমার ভাই শাওন ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির মিছিলে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট একটি ঘটনা ছিল। কিন্তু ঘটনার পর পুলিশ আমার ভাইকে যুবলীগ কর্মী বানাতে চেয়েছিল। সেটিতে ব্যর্থ হয়ে লাশ আটকে রেখে আমার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। পরে সেই স্বাক্ষর ব্যবহার করে বিএনপির পাঁচ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে। যেখানে আমাকে মামলার বাদী বানানো হয়।
পরে আমি আদালতে মামলার বিষয়ে নারাজি দিলে পুলিশ মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বাধ্য হয়। এই কারণে পুলিশ আমার পরিবারকে অনেক হয়রানি করেছে। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় মূল অপরাধীদের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমরা আশা করছি, এই সরকারের আমলে ভাই হত্যার ন্যায়বিচার পাব।
তথ্যমতে, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা শোভাযাত্রা বের করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশের গুলিতে মারা যান যুবদল কর্মী শাওন প্রধান (২৩)।
মৃত্যুর পর তাঁকে যুবলীগ কর্মী প্রমাণের চেষ্টা করে তৎকালীন পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তবে পুলিশকে লক্ষ্য করে শাওনের ইটপাটকেল নিক্ষেপের ছবি ও মিছিলের ছবির বেরিয়ে এলে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
মন্তব্য করুন