বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের পতন হওয়ার কারণে আমরা আজ সকলেই খুশি ও আনন্দিত। কিন্তু একটি দল মোটেও খুশি না, আজ তারা মনে কষ্ট নিয়ে আছেন। তারা শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। তারা মানুষের অধিকার হরণ করেছে, তারা আইনের অনুশাসনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আজকে অপরাধের কারণে পলাতক জীবন যাপন করছে। অপরাধের কারণে অনুশোচনা থেকে, তাদের ভীতি থেকে তারা আজকে পলাতক জীবন যাপন করছেন। পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপনের পর তারা এখন বিভিন্ন দেশে লুকিয়ে থেকে ষড়যন্ত্র করছে। তারা লুটপাট করে যে অফুরন্ত সম্পদ উপার্জন করেছে সেই সম্পদ ব্যবহার করে তারা আজকে ষড়যন্ত্র করছে। দেশে কিভাবে অরাজকতার সৃষ্টি করা যায়, উন্নয়নের ধারাকে রোধ করা যায় সেই চেষ্টায় তারা মগ্ন। আমরা এটা হতে দিব না।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জ রেবতি মোহন পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে নাসিক ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে সন্ত্রাস, মাদক, চাঁদাবাজ, লুটপাট, নৈরাজ্য ও অপকর্মের প্রতিবাদে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় গিয়াসউদ্দিন বলেন, সে বলতো এটা আমার দেশ, সে বলতো দেশটা আমার বাবার দেশ। অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে যারা আন্দোলন করেছিল, তাদেরকে চিহ্নিত করার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে দাম্ভিকতার সাথে সে বলেছে এ দেশ তাদের, আন্দোলন সংগ্রামকারীদের যেকোনো মূল্যে দমন করে ছাড়বে। তারা আজকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। কিন্তু তারা আজকে ষড়যন্ত্র করছে। স্বৈরাচার বিতারিত করে আমাদের মধ্যে যে নতুন স্বপ্ন সৃষ্টি হয়েছে, সেই স্বপ্নকে ধ্বংস করার জন্য তারা আজকে ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, এই সন্ত্রাসী ফ্যাসিস্ট সরকারকে আমরা দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে বিতাড়িত করেছি। আমরা অনেক রক্ত ঝরিয়েছি। দীর্ঘ ১৬ বছর আগে হাসিনা সরকার এদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। দেশের সম্পদ ও অর্থ কে লুটপাট করে ব্যাংক খালি করে দিয়েছিল। অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছিল। আমাদের কাজ এখন তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। এই সন্ত্রাসীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হলো আমাদের প্রথম দায়িত্ব। যদি আমরা তা না করি, এরা আবার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের মানুষের উপর চেপে বসবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি জোড় দাবি জানিয়ে সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন বলেন, যারা নির্বিচারে মানুষ খুন করেছে, মানবতাবিরোধী কার্যক্রম করেছে, অবিলম্বে বিচারের মাধ্যমে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশে পালিয়ে যান কিংবা গর্তের লুকিয়ে থাকুন, কিচ্ছু যায় আসেনা। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। যাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বিচার কার্য শুরু করতে হবে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তির রায় হবে। সেই রায়ের কারণে কেউ বিদেশে পালিয়ে থাকুক কিংবা এই দেশে থাকুক, তাদেরকে গ্রেফতারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যায়কারী অত্যাচার করে যদি শাস্তি না পায়, আগামী দিনে আরো নতুন অন্যায়কারী তৈরি হবে। অন্যায় করতে সাহস পাবে। সেটা হতে দেওয়া যাবে না।
সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো: সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো: জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিম জুয়েল, সহ-সভাপতি এসএম আসলাম, জিএম সাদরিল, সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব মোহাম্মদ কায়সার রিফাত, জেলা তরুন দলের সভাপতি টিএইচ তোফা, সিদ্ধিরগঞ্জ প্রগতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও থানা বিএনপির সদস্য আলহাজ্ব মাঈন উদ্দিন ও সদস্য ইব্রাহিম হাসান রাসেল প্রমূখ।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, নাসিক ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো: রওশন আলী, ২নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: আলী, ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: তৈয়ব হোসেন, ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: আবুল হোসেন, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মাহাবুব মুন্সী, ৬নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: মোস্তফা, ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: দিদারুল আলম, ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি ডিএইচ বাবুল, ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি এড. মাসুদুজ্জামান মন্টু, ১০নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: আনিস শিকদার সহ প্রমূখ।
মন্তব্য করুন