আলোকিত নারায়ণগঞ্জ, মো: সাইফুল ইসলাম সায়েমঃ
কোনোভাবেই কমানো যাচ্ছেনা কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ। সর্বশেষ তথ্যমতে দেশে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১০৯২৯, মৃত্যুবরণ করেছে ১৮৩ জন। সংক্রমণের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের অবস্থান ঢাকার পরেই। জেলায় এ পর্যন্ত ১০৭৩ আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ৬৫৩ জনই সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন।
কোভিড-১৯ সংক্রমনের সাথে সাথে বাড়ছে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায়দের খাদ্য সঙ্কট।
সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ডগুলোর করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ৪র্থ তম পর্বে থাকছে সংরক্ষিত ৬ নং ওয়ার্ডের (১৬, ১৭ ও ১৮) পরিস্থিতির সর্বশেষ খবর।
১৬, ১৭ ও ১৮ নং ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত ০৬ নং ওয়ার্ডটি গঠিত। প্রায় ২ লক্ষাধিক লোকের এখানে। যার মধ্যে প্রায় ৮০ হাজার ভোটার বাকীরা ভোটার নন। সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র আফসানা আফরোজ বিভা হাসানের দেয়া তথ্য মতো, সংরক্ষিত এ ওয়ার্ডটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭০। মৃত্যুবরণ করেছে ৫ জন।
সংরক্ষিত ওয়ার্ডটিতে কোভিড -১৯ এ সংক্রমনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খাদ্য সঙ্কট। সঙ্কট মোকাবেলায় সরকারী সহায়তার পাশাপাশি মহিলা কাউন্সিলর, কাউন্সিলর, সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সাধ্যমতো খাদ্য সহায়তা দিয়ে এসকল অসহায়দের পাশে দাড়িয়েছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য সহায়তা ও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন বর্তমান সময়ের অন্যতম সাহসী যোদ্ধা প্যানেল মেয়র বিভা হাসান। দেশ জুড়ে করোনাভাইরাসের আধিপত্য বাড়তে শুরু করলেও নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা না ভেবে মানুষের কষ্ট লাঘবে এবং মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এ প্যানেল মেয়র।
সোজা সাপটাকে তিনি জানান, তিনটি ওয়ার্ডের জন্য তিনি এ পর্যন্ত সরকারী খাদ্য সহায়তা পেয়েছেন ২১০০ প্যাকেট, যা তিনি প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌছে দিয়েছেন। এছাড়া ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার পরিবারকে খাদ্য সামগ্রীর উপহার দিয়ে পাশে দাড়াতে পেরেছেন। খাদ্য সামগ্রীর এ প্যাকেটগুলোতে ছিলো ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ পিয়াজ, ১ লিটার তেল, ১ কেজি ডাল, হাফ কেজি লবন।
প্যানেল মেয়র বিভা আরো বলেন, করোনা সংক্রমনের শুরুর দিকে অর্থ্যাৎ ২৬ মার্চ থেকেই আমি জনগনের সেবা দিতে মাঠে রয়েছি। আমরা জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মাস্ক, সাবান, হ্যান্ডবিল বিতরণ সহ এলাকায় এলাকায় মাইকিং করেছি। এছাড়া ওয়ার্ডের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রতিদিন জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া শিশুদের জন্য শিশু খাবারের ব্যবস্থা, লকডাউনে থাকা পরিবারগুলোর সার্বিক খোজ খবর, মৃতদের সৎকারের ব্যবস্থা করছেন, রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে অ্যাম্বুলেন্স সেবার ব্যবস্থা করেছেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, হিরো লিসান নামের যে ছেলেটি মারা গিয়েছিলো তার মা সবসময় ফোন করে আমার খোজ খবর নেন। আমিও তাদের খোজ খবর নেই, প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবারহ করি, শুধু তিনিই নন, পাক্কারোড এলাকার মৃত এক ব্যক্তির ছেলে রুবেল সহ অন্যান্য মৃত ব্যক্তিদের ও করোনায় আক্রান্ত পরিবারগুলোর নিয়মিত খবর নেই এবং সাধ্যমতো সহায়তা দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করছি।
এছাড়াও মমধ্যবিত্ত অনেকের ঘরে ফোন কলের মাধ্যমে গোপনে গোপনেও খাদ্য সহায়তা পৌছে দিচ্ছেন এ প্যানেল মেয়র।
সবশেষে বিভা হাসান বলেন, করোনা মোকাবেলায় এখনো নির্দিষ্ট কোনো ঔষুধ আবিস্কৃত না হওয়ায় এটাকে প্রতিরোধ করাই উত্তম। এজন্য আমাদের সকলকে অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে। তাই সকলে ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। অযথা পাড়া-মহল্লা বা কোনো দোকানে জটলা সৃষ্টি করবেন না। নিজে সুস্থ থাকুন, পরিবারকে সুস্থ রাখুন।
তিনটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররাও সরকারী ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন ও জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছেন বলে জানা যায়।
এছাড়াও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের পক্ষ তিনটি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৭০০ করে মোট ২ হাজার ১শ পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে চাল সহযোগীতা করা হয়েছিল, যা কাউন্সিলররা নিজেরা উপস্থিত থেকে অসহায়দের মাঝে বিতরণ করেন। এছাড়া ৫শ জন করে মোট পনের শ জনকে ২০ কেজি চাল বাবদ ৯ শত টাকা করে অর্থ সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাংসদ সেলিম ওসমান