আলোকিত নারায়ণগঞ্জ, শিহাব আহমেদঃ
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা ৪৯ বছর আগে স্বাধীন হয়েছি ঠিকই কিন্ত আমরা কি এখনও পর্যন্ত নিজের ভালো শিখতে পেরেছি বা ভালো মানুষ হতে পেরেছি? বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সব দেশেই চলছে অদৃশ্য এক যুদ্ধ৷ যার দরুন সব কিছুই বন্ধ হয়ে ছিল বেশ কিছুদিন। লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। যার ফলে সকলেই ঘোর বিপদের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের এই দূর্যোগের সময় বিপদে পড়া মানুষদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করে চলেছেন কিন্ত বিপদের এই সময় প্রধানমন্ত্রীর উপহার নিয়েও আমাদের মধ্যে কিছু লোক নয় ছয় করছে। উপহারগুলো অসহায় মানুষদের কাছে না পৌছে দিয়ে তারা তাদের গুদামে ভরছেন। ইতিমধ্যে দেশের কিছু জনপ্রতিনিধি দূর্নীতি করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়েছেন। তাদের সবাইকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রশ্ন হলো তারা কোন মানসিকতার মানুষ হলে দেশের এই বিপদের সময় ত্রান চুরি করে।
এদিকে, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন এখন পযর্ন্ত বের হয়নি। তাই করোনা প্রতিরোধে এখন আমাদের করনীয় সচেতন থাকা, সামাজিক দুরুত্ব মেনে চলা। আমাদের দেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালি নয় তাই সরকার দেশের মানুষের জন্য শর্ত সাপেক্ষে মিল কারখানা এবং মার্কেট খুলে দিয়েছে। তাই বলে কি আমরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে হুমরি খেয়ে মার্কেটে যাব শপিং করতে। বাস্তবে তাই হচ্ছে।
মার্কেট খোলার সাথে সাথে মানুষ হুমরি খেয়ে পড়েছে কেনাকাটার জন্য। মার্কেটগুলোর অবস্থা দেখলে মনে হবে করোনা নামক ভয়ানক ভাইরাস আমাদের দেশে কখনও ছিলো না বা কোনদিন আসেনি কিংবা মনে হবে বাংলাদেশে সমস্ত মার্কেট নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তাই দ্রুত কেনাকাটা করে নিতে হবে নাহলে আর কোনদিন কোনকিছু কেনা যাবেনা। একটু ভেবে দেখুন মানুষের মুল্যবোধ কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে।
গ্রাম থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ শহরে আসে কাজ করতে যাতে তারা পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালভাবে জীবন কাটাতে পারে৷ করোনার কারনে লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হলে এখনও গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়ে যাতে কোন ভাবেই করোনাভাইরাস সারাদেশে না ছড়াতে না পারে।বুঝতে হবে সরকার গণপরিবহন বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত বহাল রেখেছে আমাদের জন্য। যাতে আমরা বেঁচে থাকতে পারি৷ যাতে আমাদের পরিবারের সবাই ভালো থাকতে পারে।
কিন্ত আমরা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের সব বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে পালিয়ে গ্রামে চলে যাচ্ছি বা যাবার চেষ্টা করছি। তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায় এত কষ্ট, এত আত্মত্যাগ করে কি লাভ? যদি নিজের কারনে আমাদের পরিবারের সবার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে?
আমাদের দেশের এইসব পরিস্থিতি সার্বিকভাবে চিন্তা করলে মনে হয় কোথায় গেল আমাদের মানসিকতা? কোথায় গেল আমাদের বিবেক? নাকি আমদের মানসিকতা ও বিবেক কখনও সৃষ্টি হয়নি? ৪৯ বছর আগে লাখ লাখ মানুষের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি ঠিকই কিন্ত এখনও আমরা মানুষ হতে পারলাম না?
আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে সরকার এই বিপদের সময় যে নির্দেশনা দিচ্ছে তা আমাদের ভালোর জন্য। আমাদের বাঁচানোর জন্য। আমরা সবাই যদি আমাদের সরকারকে সহযোগিতা করি তাহলে অবশ্যই আমরা এই বিপদ কাটিয়ে উঠতে পারবো। এই মহামারী আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করতে হবে, তাহলেই আসবে সফলতা। তাই আমরা সবাই যেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে করোনায় মোকাবেলায় সচেতন হই এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।