আলোকিত নারায়ণগঞ্জঃ
করোনা ভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে মারা যাওয়া কুতুবপুরের নন্দলাল পুর নিবাসী আব্দুল খালেকের মরদেহ ধরতে যখন কেউ এগিয়ে আসেনি, তখনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করেছে জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা চৌধুরীর টিম।
রবিবার দিবাগত রাত ৩:৩০ টার দিকে সদর উপজেলার কুতুবপুর কবরস্থানে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে টিম মোস্তফা-১৯। মানবতা যে এখনো বেঁচে আছে আরো একবার তা প্রমাণ করতে সক্ষম টিম মোস্তফা এমনটাই বলছে স্থানীয়সহ সমগ্র নারায়ণগঞ্জবাসী।
এর আগে, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সন্ধ্যায় নন্দলালপুর বটতলা এলাকায় নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আব্দুল খালেক। বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার ছেলে শুভ।
এদিকে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে মৃত বাবার লাশ দাফনের জন্য ছেলের ডাকে আশেপাশে আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশী কেউ এগিয়ে আসছেই না, উল্টো ঘর থেকে বের না হতে আশেপাশের বাড়িওয়ালারা কড়া নির্দেশ দিয়েছিলো বলে জানা যায়। ঠিক সে সময়ই রাত ১১:১৫ মিনিটে মৃতের ছেলের মাধ্যমে খবর পেয়ে লাশ গোসল, জানাযা ও দাফন সম্পন্ন করতে ছুটে যান টিম মোস্তফা-১৯। তারা রাত ১২ টায় মৃতের বাড়িতে পৌছে ধর্মীয় মোতাবেক ও সরকারী নির্দেশনা মেনে শেষ বিদায়ের সকল রীতি সম্পন্ন করে রাত সাড়ে ৩ টায় মরুহমের দাফন সম্পন্ন করে।
করোনা ভাইরাসের সবচেয়ে কঠিন সময় চলছে আমাদের দেশে বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে, এমট সময়েওে টিম মোস্তফা জীবনের সর্বাধিক ঝুঁকি নিয়ে করোনায় মৃত ব্যক্তির জানাজা, দাফন ও কাফন করেছে এটা একটি বিস্ময়কর ব্যাপার বলে জানায় স্থানীয়রা। স্থানীয় সাধারণ মানুষসহ চেয়ারম্যান, মেম্বার ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরাও টিম মোস্তফাকে ধন্যবাদ জানান। তারা মানুষের এমন দুর্দিনে এগিয়ে এসেছেন, এজন্য মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। মরহুমের পরিবার বলে, আজ মোস্তফা ভাই ছিলো বলেই আমার স্বামীর লাশ দাফন করা সম্পন্ন হয়েছে। আমরা তার প্রতি চির কৃতজ্ঞ, চিরঋণী হয়ে রইলাম। পাশাপাশি তাদের টিমের সকলের জন্য দোয়া করি, তারা যেন মানুষের বিপদের সবসময় এগিয়ে আসতে পারে এবং তারা নিজেরা যেন সুস্থ থাকে মহান আল্লাহ তায়ালা’র কাছে সেই দোয়া করি।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে টিম মোস্তফার লিডার জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তফা হোসেন চৌধুরী বলেন, কুতুবপুরের নন্দলাল পুর নিবাসী আঃখালেক সাহেব করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত রাত ১০.৩০ মৃত্যু বরণ করেন। পরে ১১.১৫ মিনিটে পরিবারের পক্ষ থেকে আমার ছেলের মাধ্যমে আমাদের টিমের সাথে যোগাযোগ করে। ১২টার মধ্যে টিমের সদস্যদের নিয়ে মরহুমের বাড়ি পৌঁছে যাই। গোছল, দাফন ও কাফন কার্যক্রম রাত ৩.৩০ মিনিটে শেষকরি। প্রথম দিকে অসহযোগীতা করলেও পরবর্তীতে মহল্লার কিছু মুরব্বি ও যুবক আমাদের সহযোগিতার করেন। আমার টিমের সদস্যদের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি ওরা যেন সুস্থ থেকে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে।