আলোকিত নারায়ণগঞ্জ
করোনাকালীন দুঃসময়ে সাধারন মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে অনেক সুনাম অর্জন করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি গ্রুপ আলোকিত কাশীপুর। করোনার এই দুঃসময়ে সমাজের বিভিন্ন সামর্থবান ব্যাক্তি অসহায় মানুষদের মাঝে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছেন এই সংগঠনটির মাধ্যমে। করোনার দুঃসময়ে আলোচনায় আসলেও সংগঠনটি এর আগে থেকেই সমাজের অনেক উন্নয়নমুলক কাজ করে যাচ্ছে। তাদের একটাই উদ্দেশ্য সমাজের অসঙ্গতি গুলোকে দূরে সরিয়ে নতুন প্রজন্ম কে একটি সুন্দর সমাজ উপহার দেয়া । তাদের বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ড এবং সমসাময়িক অনেক বিষয় নিয়ে আলোকিত নারায়ণগঞ্জ এর সাথে কথা বলেছেন সংগঠনটির এডমিন প্যানেলের অন্যতম সদস্য মোঃ নিলয় হোসেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শিহাব আহমেদ।
কেমন আছেন?
নিলয় হোসেনঃ আলহামদুলিল্লাহ শারীরিক ভাবে ভাল আছি তবে করোনার কারণে দেশের অবস্থা চিন্তা করে মনটা ভাল নেই।
আলোকিত কাশীপুরের যাত্রা শুরু হওয়া সম্পর্কে কিছু বলুন?
নিলয় হোসেনঃ ২০১৫ সালের জুন মাসের ২৯ তারিখে আলোকিত কাশীপুরের যাত্রা শুরু হয়। সামাজিক উন্নয়নমুলক কাজ করার উদ্দেশ্যে আমরা যাত্রা শুরু করি। তারপর থেকেই বিভিন্নভাবে আমরা সামাজিক কাজ করার মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আলোকিত কাশীপুরের কর্মকান্ড নিয়ে কিছু বলুন?
নিলয় হোসেনঃ আলোকিত কাশীপুর নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছিন্ন অভিযান, কোরবানির ঈদের সময় বর্জ্য নিষ্কাশন , সবসময় সমাজের দুঃস্থ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে। এছাড়া আমরা আমাদের এলাকার ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী আলিফের চিকিৎসার জন্য অর্থ ফান্ড করেছি। করোনার সময়ে আমরা প্রথম থেকেই মাঠে আছি। প্রথমে আমরা মানুষদের সচেতন করার চেষ্টা করেছি, জীবানু নাশক স্প্রে, লিফলেট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, গ্লাভস বিতরন করেছি। তারপর মানুষদের আমাদের প্রতি একটা আশা জন্মায় তাদের জন্য আরও কিছু করার। সেই লক্ষে আমরা মানুষদের আর্থিকভাবে সহায়তা করার জন্য ফান্ড তৈরি করি। সমাজের সামর্থবানদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তা অসহায়দের মাঝে পৌছে দেয়া শুরু করি। আমাদের স্থানীয় চেয়ারম্যান জনাব সাইফুল্লাহ বাদল সাহেব তার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে প্রায় তিন লক্ষ টাকা আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে অসহায়দের মাঝে বিতরন করেছেন।
আপনাদের সংগঠনটি পরিচালনা করতে গিয়ে কখনও কোন অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়েছে কিনা?
নিলয় হোসেনঃ না আমদের এখন পর্যন্ত কোন অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়নি। কাশীপুরের সবাই আমাদের নানাভাবে সাহায্য করেছে এককথায় সবাই আমাদের পাশে থেকেছে সবসময়। গ্রুপটা আসলে কাশীপুরবাসির সকলের অংশগ্রহনেই পরিচালিত হয়। আমরা যে উদ্যোগ গুলো গ্রহন করি তা বাস্তবায়নের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন হয় সে টাকাগুলো কিন্ত কাশীপুরের জনগনই দিয়ে থাকে। যে যার সামর্থ অনুযায়ী অংশগ্রহন করে। কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের কোন বাধা নাই।
আপনাদের ভবিষ্যত পরিকপ্লনা কি?
নিলয় হোসেনঃ আমাদের কিছু থিম আছে যেমন, শিক্ষা,মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলা, স্বাস্থ্যখাত, বিশেষ করে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা ভবিষ্যতে কাজ করতে চাই আর সবসময় অসহায় মানুষদের পাশে থাকতে চাই।
করোনার এই দুঃসময়ে সমাজের সবাইকে আলোকিত কাশীপুরের পক্ষ থেকে কিছু বলুন?
নিলয় হোসেনঃ আমরা এই কার্যক্রম করতে গিয়ে দেখেছি মানুষ আসলে মানুষের জন্য অনেক করে। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ ছাড়া। করোনার দুঃসময়ে সবাই যার যার জায়গা থেকে সর্ব্বোচ্চ দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করেছে। পাঠকদের উদ্দ্যেশে বলতে চাই এতদিন যেভাবে সবাই অসহায়দের পাশে ছিল ভবিষ্যতেও যেন তারা অসহায় মানুষদের পাশে থাকে। নিজের জন্য, নিজের পরিবারের জন্য সচেতন থাকুন। সবসময় মনে রাখবেন আপনার জন্য যাতে আপনার পরিবারের বাকী সদস্যরা বিপদে না পড়ে।