আলোকিত নারায়ণগঞ্জ, বিনোদন ডেস্কঃ
নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম সহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের কল্যানে সারা বিশ্বব্যাপি ওয়েব সিরিজগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অনেক বড় বড় নির্মাতারা ওয়েব সিরিজ নির্মানের দিকে ঝুকছেন। নির্মাতাদের সাথে সাথে অনেক অভিনয় শিল্পীদেরও ওয়েব সিরিজগুলোতে অভিনয় করার আগ্রহটি ব্যাপারটি খুব লক্ষনীয়। বর্তমানে আমাদের দেশেও ওয়েব সিরিজ নির্মানে আগ্রহ দেখাচ্ছেন নির্মাতারা। দিন দিন আমাদের দেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিনোদনের এই মাধ্যমটি।
সম্প্রতি “আগষ্ট ১৪” নামে একটি ওয়েব সিরিজ আমাদের দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। “আগষ্ট ১৪” ওয়েব সিরিজটি একটি সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এটি নির্মান করেছেন গুনী নির্মাতা শিহাব শাহীন। যে কারনে বাংলাদেশি অন্যান্য ওয়েব সিরিজের তুলনায় এই ওয়েব সিরিজটি অনেক আলোচিত বা জনপ্রিয় হয়েছে তার কারনগুলো হলো নির্মাতা শাহীন সুমন খুব সুন্দরভাবে পুরো ঘটনাটি উপস্থাপন করেছেন দর্শকদের সামনে।
গল্পের প্রতিটি ছোট ছোট বিষয় গুলোও সুণিপুনভাবে তুলে ধরেছেন। এই ওয়েব সিরিজটিতে প্রত্যেক অভিনয় শিল্পী তার সর্ব্বোচ্চ দিয়ে অভিনয় করেছেন।এছাড়া বহুদিন ধরে সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে নির্মিত ফিকশন পর্দায় দেখার দাবি ছিল বাংলাদেশি দর্শকের মনে। অবশেষে সেই দাবি মিটছে এবং বেশ ভালোভাবেই মিটেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, সীমিত বাজেটে যা বানানো হয়েছে তা খুব প্রশংসনীয়। যদিও এই ওয়েব সিরিজটিতে গল্পের প্রয়োজনে কিছু অশালীন দৃশ্য দেখা গেছে যা খুব দৃষ্টিকটু লেগেছে। এই দিকটি বাদে ওয়েব সিরিজের গল্প থেকে শুরু করে অভিনয়সহ সবকিছু খুব ভাল ছিল।
তাছাড়া এই ওয়েব সিরিজটি যে বার্তা দিতে চেয়েছে, সেটিও কিন্ত কম মূল্যবান নয়। আমরা বর্তমানে এমন একটা সময়ে বসবাস করছি, যখন তরুণ প্রজন্ম মাদকের মতো ভয়াল দিকে ধাবিত হচ্ছে। সামাজিক কাঠামোতেও এতটা পচন ধরা শুরু করেছে, তাতে করে প্রতিটি পরিবার হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে, সন্তান তার পিতা মাতা কেও খুন করতে দ্বিধাবোধ করছে না। এই যখন আমাদের বর্তমান সমাজের অবস্থা তখন বিনোদন মাধ্যমে স্রেফ প্রেম-ভালোবাসা কিংবা কাল্পনিক রহস্য-রোমাঞ্চে সীমাবদ্ধ থাকলে কি আর চলে?
বিনোদনের মাধ্যমেও শিক্ষামুলক বক্তব্য দিতে হবে দর্শকদের কাছে। যাতে করে আমাদের নতুন প্রজন্ম বিনোদনের মাধ্যমেও শিখতে পারে। সে দিক থেকে নির্মাতা শিহাব শাহীন সফল কারন তিনি বিনোদনের সাথে যে বার্তা দিতে চেয়েছেন তা দর্শকরা হয়তো বুঝতে পারছেন। তাইতো ওয়েব সিরিজটি পেয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। ধন্যবাদ দিতেই হয় নির্মাতা শিহাব শাহীনকে তিনি অনেক সাহসিকতার সাথে বাংলাদেশের বিনোদনে নতুন এক মাত্রা যোগ করেছেন। সকল দর্শকদের আশা থাকবে ভবিষ্যতে তিনি এবং তার সাথে আরও মেধাবী নির্মাতারা অনেক ভাল ভাল কাজ দর্শকদের উপহার দিবেন।
ওয়েব সিরিজটি প্রচার হওয়ার পর থেকে চারিদিক থেকে প্রচুর প্রশংসা আসছে। দর্শক থেকে শুরু করে অনেক অভিনয় শিল্পীরা প্রশংসা করছেন এই ওয়েব সিরিজটির। কাজটি সম্পর্কে চারিদিক থেকে প্রশংসার ব্যাপারে নির্মাতা শিহাব শাহীন একটি গনমাধ্যমকে বলেন, “বলতে দ্বিধা নেই, আশা করিনি। ভাবনার অতীত একটা মর্যাদা পাচ্ছি। আমরা কেউই এভাবে ভাবিনি। উল্টো খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম!”
তিনি আরও বলেন, “আমিও তো একজীবনে অনেক কাজ করেছি। এর মধ্যে অনেক কাজই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রশংসাও করেছে মানুষ। কিন্তু সহকর্মীদের কাছ থেকে এমন প্রশংসা পাইনি কখনও। এজন্যই বেশি আপ্লুত আমি। আমার সহকর্মীরা, যারা কাজটা সত্যিই বোঝেন তারা অকুণ্ঠচিত্তে প্রকাশ্যে যে প্রশংসাটা করছেন তা সত্যিই আবেগ ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। তারা চাইলেই ইনবক্সে বা ফোনে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারতেন। কিন্তু তা না করে পাবলিক পোস্ট দিয়ে প্রশংসা করছেন সবাই। আমি কৃতজ্ঞ সবার প্রতি”।
“আগষ্ট ১৪” ওয়েব সিরিজটিতে মুল চরিত্রে অভিনয় করেছেন তানসুভা তিশা, এছাড়াও একটি গুরুত্বপূর্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শতাব্দী ওয়াদুদ।