সোনারগাঁয়ের পলাতক এমপি কায়সার হাসনাতের নাম ভাঙ্গিয়ে টানা চৌদ্দ বছর ধরে শহরের নয়ামাটির একটি মার্কেট দখল করে নিয়ে ভাড়া দিচ্ছে না একটি চক্র। এরা ওই মার্কেটেরই ভাড়াটিয়া। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দেয় এবং এতে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে চক্রটি।
এদের অন্যতম হোতা হলো মোহাম্মদ হোসেন, মো: অহিদুর রহমান এবং নিতাই চন্দ্র দাস গং। বিগত বছরগুলিতে এরা সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত ও তার ভাই সানজিদের শেল্টার নেয় বলে জোরালো অভিযোগ উঠে। মার্কেটটির মালিক ইভানা রোশাইনা কাদরী। তিনি কায়সার হাসনাতের বড় ভাই আবদুল্লাহ আল এহসানের স্ত্রী।
মূলত আওয়ামী স্বৈরশাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই কায়সার হাসনাত ও তার ভাই সাজজিদের শেল্টার নিয়ে ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দেয় হোসেন গং। পরবর্তীতে বিষয়টি মামলা মোকদ্দমা পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু চতুর মোহাম্মদ হোসেন, অহিদুর রহমান এবং নিতাই চন্দ্র সহ আরো অন্তত ত্রিশ জন ভাড়াটিয়া মার্কেটের মালিককে এক টাকাও ভাড়া পরিশোধ না করে এই মোটা অংকের ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ করে এসেছে।
শুধু তাই নয় এরা আবদুল্লাহ আল এহসানের মায়ের নামে জাল দলিল সৃজন করে বছরের পর বছর মার্কেটের মালিককে ভাড়া না দিয়ে হুমকি ধমকি প্রদর্শন করে এসেছে। ভাড়া চাইতে গেলেই মামলা মোকদ্দমার ভয় দেখিয়েছে। অবেশেষে অসহায় ইভনা রোশাইনা কাদরী এবং তার স্বামী আবদুল্লা আল এহসান বিয়টি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করার চেষ্টা করলে মোহাম্মদ হোসেন গং নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে মিমাংসা করার প্রস্তাব দেন এবং সমূদ্বয় ভাড়ার টাকা পরিশোধ করার কথা বলেন।
ফলে গত ১৮-০৮-২০২৪ ইং তারিখে বিচার শালিশের মাধমে তিনশ টাকা দামের জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে উভয় পক্ষের মাঝে আপোষনামা দলিল সম্পাদিত হয়। এই আপোষনামায় স্বিদ্ধান্ত হয়, ১) বকেয়া ভাড়া আগামী আঠারো মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। ২) মোট ভাড়ার এক তৃতীয়াংশ একালিন প্রথম কিস্তিতেই পরিশোধ করা হবে। ৩) ওই তারিখের এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা পরিশোধ করা হবে। ৪) প্রত্যেক ভাড়াটিয়ার জন্য তিন বছর মেয়াদী নতুন ভাড়াটিয়া চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। ৫) তিন বছর পর পর মূল ভাড়ার ১০% হারে বৃদ্ধি পাবে। ৬) বেদখল হওয়া দোকান সমূহ মার্কেট কমিটি উদ্ধার করে দিবে। ৭) উভয় পক্ষ যার যার চলমান মামলাগুলো শুনানীর তারিখে প্রত্যাহার করে নেবেন।
এভাবেই দুই পক্ষের মাঝে আপোষনামা দলিল সম্পাদন করা হয়। কিন্তু এই দলিল সম্পাদনের পর এক মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও মোহাম্মদ হোসেন গং তাদের স্বাক্ষর করা দলিল মোতাবেক কোনো টাকা পরিশোধ করে নাই। বরং এখন নতুন করে কয়েকজ-ন বিএনপির নেতার নাম করে হুমকি ধমকি দিয়ে চলেছে। তাই অসহায় ইভনা রোশাইনা এবং তার স্বামী আবদুল্লাহ আল এহসান নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মন্তব্য করুন